-->

আপদ


 


... ... ...


হরের বৃষ্টিগুলো কিছু যাচ্ছেতাই রকমের আপদ বৈকি আর কিছুই না।
লালপেড়ে সাদাশাড়ি পরিহিতা যুবতীর হুকখোলা মোলায়েম স্তনের মত,
জমাটবদ্ধ হয়ে থাকে গোটা শহুরে ব্যস্ততা।
সে এক সাময়িক সৌন্দর্য, যার প্রাপ্তিকাল স্থান-কাল-পাত্রভেদে ভিন্ন।

লোকাল বাসের শেষ সিটে বসা ছেলেগুলোর সাথে চোখাচোখি শেষে,
কানের ভাজে চুল গুঁজে প্রেমিকারা সব বাস থেকে নামে।
এই শহরেই শত প্রেমিকের দল ছাতার নিচে থামে, আলগোছে
পকেট থেকে ফোন বের করে জানায়, "পিছনে তাঁকাও, আমি তোমার বামে!"

ড্রাকুলার মত ভাড়া শুষতে থাকা রিকসাওয়ালা গুলো যখন সিক্ত ঠোঁট চেটে বলে,
"ভাড়া ৫০, গেলে উঠেন নাইলে নাই!"
তখন আকাশের দিকে তাঁকিয়ে কলেজফেরত মেয়েটার মনে প্রেম জাগেনা।
নেহাত কিছু শখের অপ্রকৃতস্থ ব্যতিত, প্রতিটি মানুষ এই বৃষ্টিতে বিরক্ত।
বিরক্ত কাঁটাতে মানুষগুলো বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় গিয়ে পোস্ট করে, "দিনটি বেশ রোমান্টিক!"

শহুরে বৃষ্টিগুলোতে কোনকিছুই ঠিকমতো হয়না।
চুলায় গ্যাস থাকেনা। দুর্ঘটনার ভয়ে লোডশেডিং।
সব মশাগুলো আশ্রয় নেয় ঘরের ভিতর।
সন্ধ্যার পর পতিতাতারাও নেই নিয়ন আলোর নিচে।
এ তবে কেমন রোমান্স?

রবীন্দ্রচর্চা! সে তো সিনেমা আর থিয়েটারে চর্চার বিষয়।
বোধকরি "ভালোবেসে সখী নীরবে নিভৃতে.." গাইতে পারা কিশোরীগুলো এতক্ষণে পড়ার টেবিলেই ঘুমোচ্ছে।

বড়জোর অনামিকাতে আংটি থাকা কিছু মোথামাটার প্রেমিকা
কেবল ব্যস্ত, বিবশ আঙুলে কি-প্যাডে ঝড় তুলতে।
এই সংখ্যালঘু মেয়েগুলোই দিনশেষে হয়ে যায় বিভিন্ন লেখকের সংখ্যাগরিষ্ঠ নায়িকা চরিত্র।
বৃষ্টিদিন আর মেঘলা আকাশদেশের আসল দাবীদার এরাই..

এটুকু ছাড়া শহুরে বৃষ্টিগুলো কোনদিনই সুখ দেয়নি,
ভুল করে লিখেফেলা কিছু লিরিক্যাল পদ্য আর গোটাকয়েক বস্তাপচা স্ট্যাটাস ওতেই হম্বিতম্বি।
তারচেয়ে এই ওম ওম শীতেমাখা রাতে চাঁদরের তলে শুয়ে,
চলুন আমরা একটি রোদওঠা বৃষ্টিবর্জিত সকালের কামনা করি.

😶

লেখা: রোড নং ছত্রিশ.
তারিখ: ৭১০২/০১/১২.