-->

খুব যেদিন বুড়িয়ে যাবো

 
 
... ... ...

আজ থেকে অনেক অনেক দিন পর, আমি তুমি বৃদ্ধ হবো।

তুমি তোমার বুড়ো ওরাংওটাংটাকে রেখে,
আমি আমার বুড়ি স্ত্রীকে ফাঁকি দিয়ে,
তোমায় নিয়ে ঘুরতে যাবো পার্কে।
যেখানে অন্যান্য বুড়োবুড়িরা করে শরীরচর্চা।

সাথে যাবে আমার নাতিন।
তোমার দিকে আঙ্গুল ইশারায় বলবো,

- "দেখ দেখ বুড়িটার গালে দাঁত নাই...হাহাহা"

সেটা শুনে তুমি কিন্তু মোটেও রেগে যাবেনা।
বরং পরম স্নেহের দৃষ্টিতে তাঁকাবে আমার নাতিন আর আমার দিকে।
কারণ, বৃদ্ধ মহিলাদের ভিতর প্রেম জন্মায় না, কেবলি থাকে স্নেহ.
 
... ... ...

আজ থেকে অনেক অনেক দিন পরে,
যখন আমি তুমি বৃদ্ধ হবো
তোমার বৃদ্ধ বরকে লাঠির ডগায় গুতো মেরে আমি বলবো,

- "দেখ শালা, তখন পারিনি তো কি হয়েছে?...এখন ঠিকই আমি চুটিয়ে প্রেম করতে পারি! তোকে পরোয়া করিনা আর"

তুমি কিন্তু তা মোটেও বরদাস্ত করবেনা!
দৌড়ে যাবে লাঠিরগুতো খাওয়া স্বামীর দিকে।
ফুঁপিয়ে বলবে,

- "ওগো, তোমার কোথাও লাগেনি তো?...ডাক্তার ডাকবো!...আর তুই, বুড়ো হনুমান! দূর হ চোখের সামনে থেকে!..ওগো, তুমি কথা বলো.."

আমি তখন আমার নাতিনকে ডেকে তোমার দিকে আঙ্গুল দিয়ে বলবো,

- "দেখ দেখ, জটাবুড়িটার ন্যাকামো দেখ!..হাহাহা, ওরাংওটাং টা কে কিভাবে জাপটে আছে দেখ!"

তখন তুমি ও তোমার বৃদ্ধ ওরাংওটাং দুজনেই আমাদের দিকে তাঁকিয়ে ফুঁসবে।

আর আমি কেবল তোমাকেই খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে থাকবো।
মনে মনে বলবো, তোমার জগতটায় আজো অনেক প্রেম তাইনা!?
 
... ... ...

আজ থেকে অনেক অনেক বছর পর,
যখন আমরা বৃদ্ধ হবো.
আমি আমার আকাশে আর তুমি তোমার আকাশে বসে করব মৃত্যুর চিন্তা ।

যদি তখন কোন এক সকালে উঠে দেখো,
এক ক্ষেপাটে বুড়ো লাঠিতে ভর করে দাড়িয়ে তোমায় প্রেম নিবেদন করছে!
অন্তত সেইদিনটায় তুমি তোমার জগতে আমায় একটু ঠাই দিও.

সেদিন নিজ খরচে,
নিজেকে সহ, গোটা আকাশটাকে
ভাঁজ করে পকেটে পুরে জ্বালিয়ে দিবো!

খুব যেদিন আমরা বৃদ্ধ হবো...
 
... ... ...
 
লেখাঃ রোড নং ছত্রিশ
তারিখ: ৭১০২/২০/৫২.