-->

কিছু বেনামি অর্কিড

 
 
... ... ...

শুরুতেই বলি, আমার দোতালায় ঘর
বেড়ে ওঠা জানালায় অর্কিড ফুল।
জল দেয়া বিকালে ছাদে উঠে রোজ
উঁকি মেরে ভালোবাসি কারোও খোলাচুল।

মেয়ে পড়ে গার্লসস্কুল, ৪টায় ছুটি
এলোমেলো ধুলো তুলে রোজ পিছে হাটি।
হুট করে পিছুফিরে যদি ভুলে চায়
ছুট দিয়ে লুকোলুকি পিলারের গায়।

সন্ধ্যার টিউশনে, ম্যাথ ভুলে যাই
ভাত খেয়ে ভুলে যাই, এঁটোপ্লেট ধুতে।
রাতঘুম উড়ে যায় গড়াগড়ি খাই
তেতলার বালিকাকে কবে পাবো সাথে!

এপ্রিলে বৈশাখ, দিন এসে যায়
এমাসের টিউশনে বেতনটা বাকি।
তেতলার প্রেম আমার সিড়ি বায় রোজ
আড়চোখে দরজায় মারে উঁকিঝুঁকি।

১৩ তারিখ, ১১টা দিবাগত রাত
অচেনা নাম্বার, মিসডকলের ফ্রেম
কলব্যাক করে শুনি সূরেলা, "হ্যালো.."
সে তো আর কেউ নয়, তেতলার প্রেম!

বৈশাখী-পান্তাতে, নয়া নয়া খুশি
পাঞ্জাবী-শাড়ি-চুড়ি, মিটিমিটি হাসি.
সারাদিন ঘুরে ঘুরে পেটভরে খেয়ে
সন্ধ্যায় বলেছে সে, "ওহে ভালোবাসি".

ঘরে ফিরে দেখি গেটে তেতলার চাচা
ইয়ে মানে উনি হলেন বাড়ির জমিদার!
হাতেনাতে কট খেয়ে বালিকার দৌড়,
আমি একা দাড়িয়ে দাগী ব্যাচেলার।

সে মাসেই ঘরছাড়া, এলাকাও ছাড়ি
তেতলার প্রেম আমার, আর খোলাচুল.
ঘর গেলো-প্রেম গেলো, আফসোস নেই
শুধু মরে যাবে রেখে আসা অর্কিড ফুল।

.... .... ....

একে একে চলে গেলো অনেক বছর
চৈত্র এলো, কত বৈশাখও যায়!
ঘরছাড়া ছেলেটার অর্কিডে রোজ
সেই তেতলার মেয়েটা আজোও পানি দেয়..
 
... ... ...

তারিখ: ৭১০২/৪০/৫১.
লেখা: রোড নং ছত্রিশ.