-->

দুটো বৃদ্ধ রুমাল

 
... ... ...

অনেকদিন পর কোন এক অন্ধকারে
শীতের কাঁপাকাঁপিতে দেখা হয়ে গেলো আবার।
আমি ভেবেছিলাম আমি ভুলে গিয়েছি
আমাদের গেয়ে যাওয়া গানগুলো,
আমি ভুলতে চেয়েছিলাম,
কাঁধের উপর দিয়ে তোমার দেয়া দৃষ্টিগুলো।
গতবছরের সোয়েটার গায়ে আমার,
আর তোমারও চোখের নিচে বয়সের কালি।
দেখো, আজ আমরা দাড়িয়ে এখানে
বৃদ্ধ দাঁড়কাকটার মতন মুখোমুখি।

প্রতিদিন সকালে পুরাতন তোমাকে ঘুম থেকে তুলেছি
কপালে আলতো আদর দিয়ে।
মেয়েটা তখনও ঘুমিয়ে থাকতো
তার নতুন ইউনিকর্নকে জড়িয়ে।
আমি ভুলে যেতে চেয়েছিলাম তোমায়,
ভেবেছি তোমার মুক্তি প্রয়োজন।
তবু কখনো মুখ ফুঁটে ডাকিনি আমি,
তুমি আমার প্রিয়জন।
আমি ভেবেছিলাম আমি ভুলে গিয়েছি সব,
মেয়েটাও আজ অনেক বড়।
দেখো, আজ আমরা মুখোমুখি দাড়িয়ে বৃদ্ধ দাঁড়কাকটার মত।

অনেকদিন পর আজও হাসলে তুমি,
প্রথমদিনটার মত ঘন কুয়াশায়।
আমি ভুলে যেতে চাই আমরা বৃদ্ধ,
চলো, আবার হাত ধরে হাটি আজ সন্ধ্যায়।
মিথ্যা বলছিনা আজোও তুমি সুন্দর,
প্রথমদিনও এটা বলেছিলাম।
হয়ত দিনদিন আরোও সুন্দর হচ্ছো
আবার প্রেমে পরে যাচ্ছি তোমার।
কাঁধ ঘুরিয়ে হাসলে তুমি ফের,
আমি ভুলতে চাইনা এই দৃষ্টি।
মুখোমুখি দুটি বৃদ্ধবয়সি দাঁড়কাক
একসাথে থাকা এক রাতের সৃষ্টি।

আমি ভালোবেসেছি তোমায় তখনও
আমি ভালোবাসি আজকেও আবার।।
কখনো জোর করে আঁটকে রাখিনি
তবু ভুল করে ভুলতেও পারিনি
আমি তুমি তবু ঘিরে থাকা এই রাত
নীরব অস্তিত্বে বাজে কদাচিৎ চিৎকার।
প্রত্যাবর্তন হোক বয়সের বিকালে,
থেমে যাক আমার ভাঙাচোরা এই গান।
যদি কখনো ফের দেখা হয়ে যায়
কাঁধের ওপারে রেখে যেও অভিমান।

আমাদের মেয়েও বুড়ো হবে একদিন,
প্রেমে পরে যাবে সেখানেও কিছু রাত।
ততদিনে আমি বেঁচে থাকবো না আর
ছুঁয়ে যাবো বাতাসে তোমাদের দুটি হাত.
তুমি বলেছিলে, একদিন আমরা বৃদ্ধ হবো নিজেদের জন্য।
আমাদের সাথে সময় থাকবেনা দুটি রুমালে স্মৃতির মত।
দাঁড়কাকেরা বৃদ্ধ হলে শীতের মত মলিন হয়,
আমার আমি'র মৃত্যু হয়েও হাত বাড়িয়ে তোমায় ছোঁয়...

... ... ...


লেখা: রোড নং ছত্রিশ.
তারিখ: ৭১০২/৭০/১৩.