অনুভূতির পলিপাস
... ... ...
যতটা সময় আমি অনুভূতিদের বিক্রি করেছি তার জন্যে যদি পয়সা পেতাম,
তবে হয়তো নাকের পলিপাসের অপারেশনটা করাতে এতটা দেরী হতোনা।
লোকে বাগধারায় 'আঙুল ফুলে কলাগাছে' আমায় ব্যবহার করা শুরু করে দিতো।
রাতারাতি বাড়ি গাড়ি কিনে সমাজের নাকউঁচু মাথাদের মাথা হতাম।
একটা কালো বনেদি বডিগার্ড আর হাতে পলিশ কাঠের ছড়ি নিয়ে পথে ঘুরতে থাকা আমাকে হয়তো তখন খানিকটা ফর্সাও দেখাতো,
কিংবা কিঞ্চিত মানুষ মানুষ।
… … …
যতবার আমি ক্লাসে লেট করে ঢোকায় স্যার আমায় অপমান করেছে গায়ে না লাগানোর ভান ধরেছি,
যতবার টিউশনে লেট করে যাওয়ায় অভিভাবকরা কপাল কুঁচকেছে না দেখে সালাম দিয়েছি,
যতবার বাড়ি ফিরতে দেরি করায় বাবা 'রাস্তার ছেলে' বলে গাল দিয়েছে না শুনে ওষুধের প্যাকেট হাতে ধরিয়ে দিয়েছি,
যতবার রাতজেগে চোখ লাল করতে হয়েছে কারোও জন্যে, যে কখনো আমার জন্য জাগেনি...
ততবার যদি একটি করে পয়সা পেতাম,
নাকের পলিপাসের অপারেশনটা করাতে এতটা দেরী করতাম না।
... … …
ডাক্তার যখন লেন্স লাগানো টর্চ মেরে পরীক্ষা করতে করতে জানতে চাইলো, কতদিন যাবত এই উটকো দলা মাংস নিয়ে ঘুরছি?
আমি চট করে জবাবটা দিতে পারিনি।
আমাকে আঙুল গুণে গুণে হিসেব কষতে হচ্ছিলো,
কতবার মাঝরাতে ঘুম ভেঙে গিয়েছে আমার শ্বাস আঁটকে।
কতরাত ঠিকসময়ে না ঘুমানোর কারণে পরদিন অফিসের বাস মিস করেছি।
কত সকালে হাঁচতে হাঁচতে রক্ত বেরিয়ে যাওয়া নাক চেঁপে ধরে আমাকে ছুটতে হয়েছে পাশের ডিস্পেন্সারির দিকে।
ছুটেছে কত জরুরি ক্লাস।
হিসেব করতে গিয়ে হিসেবও ছুটেছে কতো টিউশনের টেবিলে।
প্রচন্ড মাইগ্রেনে চেঁপে ধরা কপালের দুইপাশ রগড়াচ্ছি রগড়াচ্ছি...
অতো চট করে পারিনি জবাবটা দিতে।
প্রতিত্তোরে বলেছি, "শরীরের একটি পুরাতন সঙ্গী হতে যতটা সুযোগ দরকার পুরোটাই পেয়েছে।"
… … …
যেমনটা পেয়েছো তুমি।
হাপিয়ে গিয়ে কপালের জমিন মুছতে মুছতে বিছানায় লুটানো একটা শরীরের অংশ হতে ওরচেয়ে বেশি সময় লাগেনা কারোরই।
তোমাকে হারিয়েছি এই স্বপ্নে মাঝরাতে শ্বাস আঁটকে ঘুম থেকে জেগে উঠেছি যতবার,
ততবারই যদি একটা করে পয়সা পেতাম!
তবে হয়তো তোমার ছাঁচে অর্ডার দিয়ে নিজেকে গড়িয়ে নেয়ার মত যথেষ্ট খরচ এসে যেতো এতদিনে।
ছোট ছোট হোমিওর সাদা বড়ির মত নিজ তালুতে নিজেকে রেখে অবাক হয়ে হাসতে হতোনা।
বরং প্রতিটি অপারেশনের ডেট পেছানোর মত বিভিন্ন উছিলা দাড় করিয়ে,
পরেরবার তোমার বাড়ির পেছনের গলিতে গিয়ে আরাম করে বসার জন্য
একটা আরামকেদারা গড়াতাম।
হাসতে হাসতে কেঁদে ফেলাটা মজবুতভাবে শিখে নিয়ে
বনে যেতাম নগরজোড়া সার্বজনীন প্রেমিক।
তবে হয়তো নাকের পলিপাসের অপারেশনটা করাতে এতটা দেরী হতোনা।
লোকে বাগধারায় 'আঙুল ফুলে কলাগাছে' আমায় ব্যবহার করা শুরু করে দিতো।
রাতারাতি বাড়ি গাড়ি কিনে সমাজের নাকউঁচু মাথাদের মাথা হতাম।
একটা কালো বনেদি বডিগার্ড আর হাতে পলিশ কাঠের ছড়ি নিয়ে পথে ঘুরতে থাকা আমাকে হয়তো তখন খানিকটা ফর্সাও দেখাতো,
কিংবা কিঞ্চিত মানুষ মানুষ।
… … …
যতবার আমি ক্লাসে লেট করে ঢোকায় স্যার আমায় অপমান করেছে গায়ে না লাগানোর ভান ধরেছি,
যতবার টিউশনে লেট করে যাওয়ায় অভিভাবকরা কপাল কুঁচকেছে না দেখে সালাম দিয়েছি,
যতবার বাড়ি ফিরতে দেরি করায় বাবা 'রাস্তার ছেলে' বলে গাল দিয়েছে না শুনে ওষুধের প্যাকেট হাতে ধরিয়ে দিয়েছি,
যতবার রাতজেগে চোখ লাল করতে হয়েছে কারোও জন্যে, যে কখনো আমার জন্য জাগেনি...
ততবার যদি একটি করে পয়সা পেতাম,
নাকের পলিপাসের অপারেশনটা করাতে এতটা দেরী করতাম না।
... … …
ডাক্তার যখন লেন্স লাগানো টর্চ মেরে পরীক্ষা করতে করতে জানতে চাইলো, কতদিন যাবত এই উটকো দলা মাংস নিয়ে ঘুরছি?
আমি চট করে জবাবটা দিতে পারিনি।
আমাকে আঙুল গুণে গুণে হিসেব কষতে হচ্ছিলো,
কতবার মাঝরাতে ঘুম ভেঙে গিয়েছে আমার শ্বাস আঁটকে।
কতরাত ঠিকসময়ে না ঘুমানোর কারণে পরদিন অফিসের বাস মিস করেছি।
কত সকালে হাঁচতে হাঁচতে রক্ত বেরিয়ে যাওয়া নাক চেঁপে ধরে আমাকে ছুটতে হয়েছে পাশের ডিস্পেন্সারির দিকে।
ছুটেছে কত জরুরি ক্লাস।
হিসেব করতে গিয়ে হিসেবও ছুটেছে কতো টিউশনের টেবিলে।
প্রচন্ড মাইগ্রেনে চেঁপে ধরা কপালের দুইপাশ রগড়াচ্ছি রগড়াচ্ছি...
অতো চট করে পারিনি জবাবটা দিতে।
প্রতিত্তোরে বলেছি, "শরীরের একটি পুরাতন সঙ্গী হতে যতটা সুযোগ দরকার পুরোটাই পেয়েছে।"
… … …
যেমনটা পেয়েছো তুমি।
হাপিয়ে গিয়ে কপালের জমিন মুছতে মুছতে বিছানায় লুটানো একটা শরীরের অংশ হতে ওরচেয়ে বেশি সময় লাগেনা কারোরই।
তোমাকে হারিয়েছি এই স্বপ্নে মাঝরাতে শ্বাস আঁটকে ঘুম থেকে জেগে উঠেছি যতবার,
ততবারই যদি একটা করে পয়সা পেতাম!
তবে হয়তো তোমার ছাঁচে অর্ডার দিয়ে নিজেকে গড়িয়ে নেয়ার মত যথেষ্ট খরচ এসে যেতো এতদিনে।
ছোট ছোট হোমিওর সাদা বড়ির মত নিজ তালুতে নিজেকে রেখে অবাক হয়ে হাসতে হতোনা।
বরং প্রতিটি অপারেশনের ডেট পেছানোর মত বিভিন্ন উছিলা দাড় করিয়ে,
পরেরবার তোমার বাড়ির পেছনের গলিতে গিয়ে আরাম করে বসার জন্য
একটা আরামকেদারা গড়াতাম।
হাসতে হাসতে কেঁদে ফেলাটা মজবুতভাবে শিখে নিয়ে
বনে যেতাম নগরজোড়া সার্বজনীন প্রেমিক।
বদলে কি হলো?
প্রতিটি পয়সা নরম হাতে মাটির হাতির পিঠে ঢুকিয়ে নেড়েচেড়ে দেখতে দেখতে কবে যে নাকটাই বন্ধ হয়ে গেলো,
আর তা বুঝতে বুঝতে কবে যে অপারেশনটাই করিয়েই ফেললাম নিজেই টের পেলামনা!
… … …
টের পেয়েছি সপ্তাহখানেক হলো,
মাঝরাতে নাকের ব্যান্ডেজটা আলগা হয়ে উঠলো যখন।
এতদিনের সঙ্গী পলিপাসটার অংশীদারত্ব ঘুঁচিয়ে আবিষ্কার করলাম,
নিজ অনুভূতি আর নিজের মাঝে আমার তফাত ব্যস্ত করিডোরের মত বিশাল।
যেটা এতটা বছর জোড়াতালি দিয়ে দাড় করিয়ে রাখতো,
ওই অতিরিক্ত উটকো পলিপাসটাই...
... ... ...
তারিখঃ ৯১০২/৮০/৬০.
লেখাঃ রোড নং ছত্রিশ.
লেখাঃ রোড নং ছত্রিশ.
Post a Comment