"ফানুস পোড়ে আর উড়ে"
... ... ...
ফানুস পোড়ে আর উড়ে...
এমন একটা করুণ দৃশ্য আমি এবং আমরা
আমাদের চোখে আর নিজেদের ভেতর আঁটকে রেখে বসে আছি অনেকক্ষণ।
তোমরা জন্মাবধি বুর্জোয়া কিনা, পুড়িয়েই তাই মুক্তির সুখ।
.
কেউ মরে গেলো পুড়িয়ে দিলাম,
কেউ চলে গেলো পুড়িয়ে নিলাম,
হাতে একলা ফানুস পেলাম, বিনাবাক্যে উড়িয়ে দিলাম।
কি ভীষণ একটা বোবা কষ্ট কুড়েকুড়ে খায়!
একটা ফানুস বুকের ভেতর উড়ে উড়ে যায়।
... ... ... ...
আমাদের ভেতর কখনো ভালোবাসা জন্মায়নি।
ওসব ছিলো ভয়। ভয় থেকে তৈরি করা কর্তৃত্বের শেকল।
জন্মাবধি মানুষ কিনা, আত্মভোগেই খুঁজতাম সুখ।
.
ওটা করতে গেলে আঁটকে দিলাম,
এটা ছুঁতে চাইলে সড়িয়ে নিলাম,
যখন তখন আঘাত করে, ঝগড়া করে মিটিয়ে দিলাম।
কি করুণ একটা অপচ্ছায়া গোলাকারে ঘুরে!
এখন ভীষণ খারাপ লাগে, ফানুস পোড়ে আর উড়ে।
... ... ... ...
খারাপ লাগা খুব স্বাভাবিক, লাগতেই পারে কারোও।
তবু মাঝেমধ্যেই চাইলে কিন্তু খবর নিতে পারো।
খবর দিতাম এখন আমি কেমন করে ঘুমাই,
সুতির কাপড় চশমার কাঁচে ক'টা স্ক্র্যাচ দিলো,
টিউশন করে ফেরার পথে কত মানুষ দেখি,
বা তোমার দেয়া সিগারেটটা আগুন কোথায় পেলো...
.
তবে বাড়তি কিছু টুকরো খবর আমার কানেও আসে।
সেই ছেলেটা কেমন আছে? এখনো ভালোবাসে?
এখনও কি আগুন জ্বালে আদর করার ছলে?
মন খারাপের বিকেলবেলায় যখন কান্না পায়,
বোকা বোকা গল্প বলে? নাকি কেবলি আঁচ পোহায়!
... ... ... ...
তবে যাইহোক, এদিকের সব ভালোই।
প্রলেতারিয়েত আমার আমি, আহাম্মকের মত
আজোও বসে শব্দ দিয়ে কতক ফানুস বানাই।
কাঠির আগুনে শ্মশান যেমন জ্বলে অন্ধকারে,
তেমনি রোজ আমার ফানুস পোড়ে আর উড়ে...
... ... ... ...
তারিখঃ ৯১০২/১১/৭১.
লেখাঃ রোড নং ছত্রিশ.
Post a Comment