-->

"দুই ভিখারি"

… … …

আমি প্রেমিক ভিক্ষে খুঁজি তোমায় ধনী ভেবে,
তুমি প্রেয়সী ধনী ভাবো আমার দিকে চেয়ে।
ভিক্ষা করেছি, করুণা চেয়েছি দুজনই দুহাত পেতে,
'কসম লাগে প্রেমের সুধা একটুকু চাই খেতে'।
.
দিন গেলো, মাস গেলো, বছর গড়িয়ে পাড়
তোমার-আমার প্রেম ভিক্ষার শেষ হয়না আর।
.
দুই ভিখারির শূন্য থলে যখনই সামনে এলো,
ভাবলাম "ও ধনী মেয়ে, আমায় ঠকিয়ে গেলো!"
তুমিও ভাবলে, "আমি প্রতারক, ধনীর বেশে ঠকাই!"
প্রেমের নামে মানুষ আমরা, এভাবেই রোজ হারাই...

… … …
... … …

আশেপাশের সবাই আমরা প্রেমের কাঙাল। 
সবাই সবার দিকে তাঁকিয়ে করুণভাবে খুঁজি,
কিছু একটা মন দিয়ে চাই, নিজের জন্য আকুতি নিয়ে ভালোবাসার মানুষ চাই।
.
যারদিকে তাঁকিয়ে তোমার-আমার ভীষণ রকম প্রেম জাগে, মাঝরাতে সেই মানুষও কিন্তু প্রেমের জ্বরে মরে।
এমন দুই কাতর মানুষ যখন কোনোভাবে একে-অন্যের সংস্পর্শে আসে, স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে ভাবে,
- "পাইলাম আমি উহাকে পাইলাম! আমার আর কিছুই চাওয়ার নেই! তাকে পেয়ে আমি পরিপূর্ণ!"
.
তবে একটি শূণ্য গ্লাস আরেকটি শূণ্য গ্লাসকে কখনো পরিপূর্ণ করতে কি পারে? পারেনা।
যাকে ভেবে তুমি-আমি তৃপ্তির ঢেকুর তুলি সেই মানুষটাও তো একই চাহিদা, একই ক্ষুধা, একই শূণ্যতা নিয়ে তোমার কাছে আসলো।
তুমি তাকে কি দিয়ে পূর্ণ করবে? পূর্ণ করার কিছুই থাকেনা। 
.
এভাবে একটা সময় দুই ভিখারিই আবিষ্কার করে বসে, আসলে অপরজনের নিকট যা পাওয়ার আশায় এসেছি তা তার নিকট নেই।
শুরু হয় ভুল বুঝাবুঝি, 
মনে হয় "সে বুঝি জেনেশুনে আমায় ঠকালো!'
অপরজনও এভাবেই ভাবে, "আমি কিভাবে ঠকাবো! বরং তুমিই তো প্রতারক আমায় ঠকিয়ে নিজে ভান করছো!"
.
হয়ে যায় বিচ্ছেদ। মিথ্যে প্রমাণিত হয় ভালোবাসা নামের বোধটা। 
মানুষগুলো হয়ে যায় আবারও একা, এবং এবারের এই একাকিত্বে আর আগের মত কোনো চাহিদা থাকেনা।
এই একাকিত্বে সম্পূর্ণভাবে মিশে থাকে, কারোও অনিচ্ছায় দিয়ে যাওয়া কষ্টের দেনাপাওনার হিসাব-নিকাশ... 

… … …

যান, উপরে গিয়ে কবিতাটা আরেকবার পড়ে আসুন...

লেখাঃ রোড নং ছত্রিশ
তারিখঃ ৯১০২/১১/৯১.