স্বীকারোক্তি
... ... ...
তুমি কি অনন্যা নও?
আমি বলেছি যখন তখন তুমিই অনন্যা।
হয়ত চোখ উলটে জিজ্ঞাস করবে, আমি কে?
কে আমি যে, স্বৈরাচারীর মত নামের আলপনা এঁকে
দিলাম তোমার সর্বাঙ্গে? কিসের অধিকার?
তোমার হয়ত কোনো নাম আছে।
হতে পারে তা মাধবী, অপা বা হেমা; তাতে কি?
প্রথমবার যে তোমার নাম দিয়েছিলো
তার দিকে তো এভাবে তেড়ে যাওনি!
রোজ তো মধ্যদুপুরে বাসস্ট্যান্ডে তুমি ছেলেদের মাঝে দাড়াও।
ছেলেদের ভীড় ঠেলে বাসে উঠে ছেলেদের লুকাতে
জলদি মেয়েদের স্বভাবে ওড়না ঠিক করো।
তুমি কি তবে অনন্যা নও?
যদি তুমি তা নাই বা হলে, তবে কেনো
আমি অথবা আমরা তখনও তোমার সর্বাঙ্গ ছুঁয়ে দিই গোপনে?
বাস থেকে নামার সময় পিঠ ছুঁয়ে নিই উষ্ণতা?
এই আমিই আবার তোমার পিছে পিছে হেটে
তোমার বাড়ি অবধি লুকিয়ে হাটি।
তুমি যখন সেফটিপিনে হিজাব বাঁধো
আমি তখন হারানো আটলান্টিসের মত খুঁজতে
থাকি তোমার সেফটিপিনের কোথাও ফাঁকা আছে কিনা!
দুর্নিবার আকর্ষণে আমি ঠোঁট চেটে নিয়ে
আলতোভাবে ভীড়ের মাঝে স্পর্শ করি তোমার কোমল।
তুমি কি অনন্যা নও?
যদি তা নাই বা হলে তবে কেনো
আমি অথবা আমরা তখন
তোমার জন্য বাপ, ভাই, স্বামী কিংবা প্রেমিক বনে কলার চেপে ধরি নিজেদের?
নিজের জাতকে নিজেই মারতে থাকি তোমায় ছোঁয়ার অপরাধে?
তোমার হাতে না খেলে আমার পেট ভরেনা,
তোমার স্নেহ না পেলে আমার পকেট ভরেনা,
তুমি আমার হবে বলেই আমি চাকুরী খুঁজি,
তুমি খুব আদুরে বলেই আমি চক্লেট কিনি,
তুমি কি তবে অনন্যা নও?
যদি তুমি তা নাই বা হবে কেনো
আমি অথবা আমরা তোমায় নিয়ে স্বপ্ন বুনি?
নিজের স্বভাবে নিজেই হেরে অন্ধকারে জাপটে ধরি?
তোমার ঠোঁটে অর্থহীন শুকনো হাসি।
পরিবার, সংসার কিংবা সমাজে তুমি ব্যর্থ।
কেউ বিশ্বাসই করতে চায়না তুমি কে?
মাঝরাতে তুমি যখন জ্বরের ঘোরে কপাল ছুঁয়ে যাও
আমি অথবা আমরা তখন ধর্ষক থেকে নাবালক হয়ে যাই।
টিপটিপ পানির ফোঁটায় বিড়বিড় করে নিজেদের অক্ষমতা স্বীকার করি।
কেউ যখন শুনতেও চায়না তখনও সমানে দাবী করতে থাকি,
তুমিই অনন্যা।
... ... ...
তারিখ: ৮১০২/৩০/১৩
লেখা: রোড নং ছত্রিশ.
Post a Comment